কুকুরকে ধর্ষণ বৃদ্ধের, অতঃপর…..

বাড়ির দোতলায় মায়ের সঙ্গে শুয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ করেই কুকুরের তীব্র আর্তনাদ শুনতে পান তিনি। প্রথমে তেমন গুরুত্ব দিতে চাননি। কিন্তু চিৎকার একসময় আর্তনাদে পরিণত হয়। এরপরেই তার খটকা লাগে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি একতলায় নেমে আসেন। এরপর যে দৃশ্য তাকে দেখতে হয়, তাতে স্তম্ভিত হয়ে যান দমদম বেদিয়া পাড়ার বাসিন্দা মাহেশ্বরী চক্রবর্তী।

দেখতে পান, তাদেরই ভাড়াটে, বৈদ্যনাথ দেবনাথ নামে এক বৃদ্ধ একটি কুকুরকে ধর্ষণ করছে। এই কুকুরটি তাদের অত্যন্ত প্রিয় পোষ্য, যার নাম সোনামণি। চিৎকার করে ওঠেন মাহেশ্বরী। ছুটে আসেন আশপাশের বেশ কয়েকজনও। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনা ঘটে ভারতের কলকাতা রাজ্যে।

কাছেই থাকতেন এলাকায় পশুপ্রেমী বলে পরিচিত রুপা বসু৷ প্রতিদিনই অনেক রাত করে পথে কুকুরদের খাবার খাওয়ান তিনি। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন তিনিও। প্রত্যেকেই চমকে যান এই ঘৃণ্য কাজ দেখে। কিন্তু ততক্ষণে লোকজন দেখে বৈদ্যনাথ পালিয়ে যায়।

সকাল হতেই মহেশ্বরী এবং রুপা বসু কলকাতার বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠনকে গোটা বিষয়টি জানান। তাদের সাহায্য নিয়ে দমদম থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু দমদম থানার পুলিশ ঘটনাটিকে কোনরকম গুরুত্ব দিতে চায় না বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

উল্টে অভিযোগকারীরা যাতে লিখিত অভিযোগ তুলে নেন, তার জন্য চাপ দেওয়া হয় বলেও জানিয়েছেন অনেকে। এরপরে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠনের মাধ্যমে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধীকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়। এরপরই মানেকা গান্ধীর চাপে দমদম থানার পুলিশ সক্রিয় হয়। ওই দিন গভীর রাতেই অভিযুক্ত বৈদ্যনাথ দেবনাথকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দেবনাথের বিরুদ্ধে পশু সুরক্ষা আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।

ব্যারাকপুর আদালতে অভিযুক্ত বৈদ্যনাথ দেবনাথকে তোলা হলে বিচারক থাকে ১১ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

অভিযোগকারী মাহেশ্বরী চক্রবর্তী জানান, এই ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছি। কি করে মানুষ এরকম নির্মম হতে পারে? গত বেশ কয়েকদিন ধরেই এই ছোট্ট কুকুরটিকে দেখছিলাম, দিনের বেলায় ঝিমিয়ে থাকছে, মাঝেমধ্যেই কাঁদছে। কেউ যে এরকম ঘৃণ্য কাজ করছে ওর সঙ্গে, তা কল্পনাতেও আনতে পারিনি। বৈদ্যনাথের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।

আপনি আরও পড়তে পারেন